ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়মঃ গরু মোটাতাজাকরণ ইউরিয়ার ব্যবহার

 আখের রস থেকে চিনি হয়। চিনি শোধনপ্রক্রিয়ায় নিঃসৃত ঘন কালো সিরাপ বিশেষ কে চিটাগুড় বলা হয়। মোলাসেস মানে হলো এই আখের রস থেকে চিনি তৈরির সময় যে কালো ঘন গুড়ের মতো দেখতে হয়। এই পদার্থ কে এক এক অঞ্চল এক এক নামে বলা হয়।

এই চিটাগুড় হলো একটা এনজাইম। যা পশুর ভিটামিন মিনারেলসের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। চিটা গুড়ের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। হজমে এর জন্য চিটাগুর খুবই ভালো কাজ করে। চিটা গুড়ের উপকারিতা হলো প্রিবায়োটিক তৈরি করতে বিষেশ ভাবে কাজ করে

চিটাগুড় এর অনেক কাজ সম্পর্কে তো জানলাম। এখন আমরা চিটাগুড়ের দাম সম্পর্কে একটি জানবো। চিটাগুড়ের দাম এখন খুব বেশি হতেই চলেছে। বর্তমান বাজারে ১ কেজি চিটাগুড়ের পাওয়া যাচ্ছে ৫০ - ৬০ টাকা। প্রতিদিন এই চিটাগুড়ের চাহিদা যেমন বেড়ে চলেছে তেমনি এর দাম ও বাড়ছে।

আমরা গরুকে খুব বেশি পুষ্টি যুক্ত খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। চিটাগুর গরুকে খাওয়ালে খুবই ভালো হয়। গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম হলো ৫ কেজি চিটাগুড় ১০ লিটার পানির ও ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া সার এক সাথে মিশিয়ে ২০ কেজি খড়ের সাথে দিয়ে খাওয়াতে হয়। একে ইউরিয়া মোলাসেস বলে।

ইউরিয়া মোলাসেস তৈরি করার জন্য প্রয়জন খর, পানি, চিটাগুড় ও ইউরিয়া সার। ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়ম হলো ১ কেজি চিটাগুড় এর সাথে ২ লিটার পানি ও ২৫ গ্রাম ইউরিয়া সার মিশিয়ে তা খরের সাথে মিশিয়ে গরুকে খাওয়ানো। এই ইউরিয়া মোলাসেস পশুর শক্তিশালী একটি খাবার। প্রায় সকল পুষ্টি এর মধ্যে থেকে গরু পেয়ে যায়।

আমরা প্রতিটি কাজ কে সহজ করতে চাই। তেমনি ইউরিয়া মোলাসেস বহন করা ও গরুকে পরিমান মতো খেতে দেওয়াই কোনো ঝামেলা হবে না তাই ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির করা হয়। ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির নিয়ম হলো কিছু পরিমানে ইউরিয়া মোলাসেস নিয়ে তা একটি কাঠামো দেওয়া। এই প্রক্রিয়াটি আমরা নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

সকল কিছুর একটি নির্দিষ্ট পরিমান আছে। ইউরিয়া মোলাসেস ও নির্দিষ্ট পরিমানে খাওয়াতে হবে। ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানোর নিয়ম হলো প্রাপ্ত বয়সের একটি গরুকে প্রতিদিন ২৫০ - ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়াবে। মোলাসেস কম পরিমানে খাওয়ালে সমস্যা নাই। কিন্তু বেশি পরিমানে কখনো খাওয়ানো যাবে না।

আমরা ছাগলকে ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়াতে পারি। ছাগলের ওজন বৃদ্ধি হতে ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ছাগলকে ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানো যাবে। ছাগলকে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়ম হলো প্রাপ্ত বয়সের একটি ছাগলকে ৩০ - ৫০ গ্রাম এই পরিমানে খাওয়াতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, বেশি পরিমানে ইউরিয়া মোলাসেস ছাগলকে খাওয়ানো যাবে না।

ইউরিয়া মোলাসেস হলো পশুর অল্প খাদ্যে বেশি পুষ্টি। ইউরিয়া মোলাসেস এর উপকারিতা হলো অল্পতেই গরুর অধিক মাংস বৃদ্ধি এবং গরুর খাবার এর রুচি বৃদ্ধি করে। গরু মোটাতাজাকরনে ইউরিয়া মোলাসেস এর প্রয়োজন খুব বেশি।

ইউরিয়া সার এ রয়েছে নাইট্রজেন। আমরা সরাসরি ইউরিয়া সার গরুকে খেতে দিলে গরুর বদ হজম হবে। গরু মোটাতাজাকরণ ইউরিয়ার ব্যবহার করা হয় চিটাগুর, পানি ও খর এর সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ালে অল্প সময়ে গরু মোটাতাজাকরণ করা সম্ভব হয়।

আজকের এই পোস্ট এ আপনারা বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন নিম্নের বিষয় গুলো-

  • মোলাসেস মানে কি
  • চিটা গুড়ের উপকারিতা
  • চিটাগুড়ের দাম কত
  • গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম
  • ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়ম
  • ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির নিয়ম
  • ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানোর নিয়ম
  • ছাগলকে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়ম
  • ইউরিয়া মোলাসেস এর উপকারিতা
  • গরু মোটাতাজাকরণ ইউরিয়ার ব্যবহার

মোলাসেস মানে কি




মোলাসেস মানে কি
মোলাসেস মানে কি



মূলত চিটাগুড়কে মোলাসেস বলা হয়। চিটাগুর যদি কেউ না চিনতে পারেন তাহলে তাদের বলবো আখের রস থেকে চিনি তৈরির সময় যে কালো গুড়ের মতো পদার্থ বের হয়, তাকে চিটাগুড় বলে। এই চিটাগুড় প্রণীর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রণীর দেহে চিটাগুড় এর এর প্রয়জনীয়তা অনেক বেশি। আমরা ইউরিয়া মোলাসেস তৈরি করতে এই চিটাগুর ব্যবহার করে থাকি। গরুর রুচি বৃদ্ধিতে এই চিটাগুড় খুব ভালো কাজ করে।

চিটা গুড়ের উপকারিতা


চিটা গুড়ের উপকারিতা
চিটা গুড়ের উপকারিতা



চিটাগুড় এর উপকারীতার কোনো কমতি নাই প্রাণী দেহে। গরু বা ছাগল মোটাতাজাকরণে চিটাগুর ব্যবহার করা হয়। চিটাগুড় গরু বা ছাগলের এনজইম হিসেবে কাজ করে। চিটাগুড় দিয়ে তৈরি করা হয় ইউরিয়া মোলাসেস। চিনি শোধনপ্রক্রিয়ায় নিঃসৃত ঘন কালো সিরাপ বিশেষ কে চিটাগুড় বলা হয়। মোলাসেস মানে হলো এই আখের রস থেকে চিনি তৈরির সময় যে কালো ঘন গুড়ের মতো দেখতে হয়। এই পদার্থ কে এক এক অঞ্চল এক এক নামে বলা হয়।

চিটাগুড়ের দাম কত


চিটাগুড়ের দাম কত
চিটাগুড়ের দাম কত



চিটাগুড় এর অনেক কাজ সম্পর্কে তো জানলাম। এখন আমরা চিটাগুড়ের দাম সম্পর্কে একটি জানবো। চিটাগুড়ের দাম এখন খুব বেশি হতেই চলেছে। বর্তমান বাজারে ১ কেজি চিটাগুড়ের পাওয়া যাচ্ছে ৫০ - ৬০ টাকা। প্রতিদিন এই চিটাগুড়ের চাহিদা যেমন বেড়ে চলেছে তেমনি এর দাম ও বাড়ছে। আগে চিটাগুর এর চাহিদা কম ছিলো কারণ গরু ছাগল কে চিটাগুড় খাওয়ানোর উপকারিতা মানুষ জানতো না।

গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম


গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম
গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম



আমরা জানলাম যে গরুকে চিটাগুড় খাওয়ালে কতই না ভালো হয়। গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর কিছু নিয়ম আছে। আমরা গরুকে চিটাগুড় খাওয়াবো ইউরিয়া মোলাসেস করে। ইউরিয়া মোলাসেস বলতে পানি, খর, ইউরিয়া সার ও চিটাগুড় দিয়ে তৈরি খাদ্য। আমরা গরুকে খুব বেশি পুষ্টি যুক্ত খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। চিটাগুর গরুকে খাওয়ালে খুবই ভালো হয়। গরুকে চিটাগুড় খাওয়ানোর নিয়ম হলো ৫ কেজি চিটাগুড় ১০ লিটার পানির ও ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া সার এক সাথে মিশিয়ে ২০ কেজি খড়ের সাথে দিয়ে খাওয়াতে হয়।

ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়ম



ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়ম
ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়ম



আজকে আপনাদের ১০০ কেজি ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির করা শিখাবো। ১০০ কেজি ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির জন্য প্রয়োজন পানি ৫০ লিটার, চিটাগুড় ২৪ কেজি এবং ইউরিয়া সার ৩ কেজি। এখন আমরা ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়ম টা দেখাবো-
প্রথমে আমরা উপরের দেওয়া পরিমাণমতো খড়, চিটাগুড় ও ইউরিয়া সার মেপে নিবো। এখন একটি পাত্রে পরিষ্কার পানি নিতে হবে। পাত্র টি এমন হতে হবে যেনো সমস্ত উপকরণ গুলো পাত্রে দিয়ে মেশানো যায়। এবার পানি চিটাগুড় ও ইউরিয়া সার ভালো করে মিশিয়ে নিবো। এবার আমরা একটি পলিথিন নিয়ে তাতে সমস্ত খর গুলো বিছিয়ে দিবো। এখন খর এর উপর আগের মেশানো দ্রবণ ধীরে ধীরে ঝরনা বা হাত দিয়ে ছিটিয়ে দিবো। প্রয়োজনে খড়কে উল্টিয়ে দিতে হবে যাতে সমস্ত খড় দ্রবণ শুষে নিতে পারে। এখন স্তরে স্তরে খড় সাজিয়ে তাতে সমঅনুপাতে ইউরিয়া মোলাসেস দ্রবণ মিশিয়ে দিতে হবে। ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো ইউরিয়া মোলাসেস বা ইউএমএস।

ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির নিয়ম


ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির নিয়ম
ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির নিয়ম



মূলত ইউরিয়া মোলাসেস গরুকে খেতে দেওয়া সহজ করে তুলতে ব্লক তৈরি করা হয় তাকে ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক বলে। এখন আপনাদের ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির নিয়ম শেখাবো।

ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরির জন্য প্রয়োজন হবে ইউরিয়া সার, পাথরের চুন, চিটাগুড় ও গমের ভুষি।

প্রথমে ৬ কেজি চিটাগুড় কড়াই বা তাওয়াই দিয়ে জাল দিতে হবে। এবার কড়াই এ ৩ কেজি গমের ভুষি দিয়ে ভালো করে মিশাতে হবে। এবার আমরা কড়াই এ ৩০ গ্রাম লবন ও যে কোনো কম্পানির ডিবি পাওডার করাই এ দিতে হবে। আমরা এখন ৮৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার মেপে একটি পাত্রে রাখবো। পাথরের চুন ৫৫০ গ্রাম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার ইউরিয়া ও চুন ভালো করে মিশিয়ে করাই এ দিয়ে দিতে হবে।

এখন আমরা জাল দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে চুলা থেকে কড়াই নামিয়ে নিবো। এবার ভালো করে নাড়া দিতে থাকবো। আঠা আঠা ভাব না আসা পর্যন্ত নাড়া চাড়া করতে হবে।

এবার আমরা একটি ছাচে তৈরি করা মোলাসেস দিয়ে ব্লক আকারে করে নিবো। ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক।

ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানোর নিয়ম


ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানোর নিয়ম
ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানোর নিয়ম



ইউরিয়া মোলাসেস গরুকে খাওয়ালে গরু মোটাতাজা করণ করা সম্ভব। আমরা প্রথমে অল্প অল্প করে ইউরিয়া মোলাসেস গরুকে দিবো। তারপর আসতে আসতে এর পরিমান বৃদ্ধি করবো। ইউরিয়া মোলাসেস ও নির্দিষ্ট পরিমানে খাওয়াতে হবে। ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানোর নিয়ম হলো প্রাপ্ত বয়সের একটি গরুকে প্রতিদিন ২৫০ - ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়াবে।

ছাগলকে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়ম

ছাগলকে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়ম হলো ইউরিয়া মোলাসেস করে খাওয়াতে হবে। আমরা ছাগলকে ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়াতে পারি। ছাগলের ওজন বৃদ্ধি হতে ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ছাগলকে ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ানো যাবে। ছাগলকে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়ম হলো প্রাপ্ত বয়সের একটি ছাগলকে ৩০ - ৫০ গ্রাম এই পরিমানে খাওয়াতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, বেশি পরিমানে ইউরিয়া মোলাসেস ছাগলকে খাওয়ানো যাবে না।

ইউরিয়া মোলাসেস এর উপকারিতা


ইউরিয়া মোলাসেস এর উপকারিতা
ইউরিয়া মোলাসেস এর উপকারিতা



ইউরিয়া মোলাসেস হলো পশুর অল্প খাদ্যে বেশি পুষ্টি। ইউরিয়া মোলাসেস এর উপকারিতা হলো অল্পতেই গরুর অধিক মাংস বৃদ্ধি এবং গরুর খাবার এর রুচি বৃদ্ধি করে। গরু মোটাতাজাকরনে ইউরিয়া মোলাসেস এর প্রয়োজন খুব বেশি।

গরু মোটাতাজাকরণ ইউরিয়ার ব্যবহার


গরু মোটাতাজাকরণ ইউরিয়ার ব্যবহার
গরু মোটাতাজাকরণ ইউরিয়ার ব্যবহার



ইউরিয়া সার এ রয়েছে নাইট্রজেন। আমরা সরাসরি ইউরিয়া সার গরুকে খেতে দিলে গরুর বদ হজম হবে। গরু মোটাতাজাকরণ ইউরিয়ার ব্যবহার করা হয় চিটাগুর, পানি ও খর এর সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। ইউরিয়া মোলাসেস খাওয়ালে অল্প সময়ে গরু মোটাতাজাকরণ করা সম্ভব হয়।

উপসংহারঃ

ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির নিয়ম সম্পর্কে যদি কোনো ভুল তথ্য দিয়ে থাকি তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আসা করি কোনো ভুল তথ্য আপনাদের দিতেছি না। এই পোস্টে বানান বা বাক্যে কোনো ভুল থাকলে আমাকে মাফ করবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url