প্রাকৃতিক উপায়ে অল্প খরচে দেশি মুরগির খাবার তালিকা

দেশি মুরগির খাবার তালিকা সঠিক পদ্ধতিতে না করতে পারলে খামারে ডিম ও ওজনে হ্রাস পাবে। দেশি মুরগি সাধারণত ডিম ও মাংসের জন্য তৈরি করা হয়। খাবার এ সঠিক মাত্রায় মিনারেল ও প্রটিন না থাকলে ডিম ও ওজনে কম হবে। ফিড খাওয়া দেশি মুরগিকে বাজারে নিয়ে গেলে সোনালি বলে। কারণ ফিড খাওয়ানো দেশি মুরগি, সাধারণ দেশি মুরগির থেকে কম ছোটাছুটি করে। তাই দেশি মুরগিকে সোনালি মুরগি বলে। এই সমস্যার সমাধান ও দেশি মুরগির টেস্ট সঠিক রাখার জন্য নিম্নে একটি পদ্ধতি দেওয়া হলো-

  • প্রথমে দেশি মুরগির বাচ্চা ৩০ দিন ২৪ ঘন্টা পরিমান মতো আলোতে রেখে পালন করতে হবে।
  • দেশি মুরগিকে এই ৩০ দিন ব্রয়লার স্ট্রাটার ফিড খাওয়াতে হবে।
  • এবার ৩০ - ৬০ দিন বয়সে দেশি মুরগিকে ১৫ ঘন্টা আলোতে রাখতে হবে।
  • এই ৩০ - ৬০ দিন বয়সে দেশি মুরগিকে কাঁচা ঘাস, ফিসমিল, ধান, গম ও ভুট্টা ভাঙ্গা খেতে দিতে হবে।
দেশি মুরগির খাবার তালিকা
দেশি মুরগির খাবার তালিকা


দেশি মুরগির খাবার তালিকা


দেশি মুরগির খাবার তালিকা অন্য মুরগির থেকে আলাদা। দেশি মুরগি যে কোনো খাবার দেওয়া যায়। আমরা আজকে দেশি মুরগির ওজন বৃদ্ধির খাবার তালিকা, দেশি মুরগির খাবার তৈরি, দেশি মুরগির প্রতি দিনের খাবারের পরিমান, দেশি মুরগি বিক্রয়ের সঠিক সময় এবং প্রাকৃতিক উপায়ে দেশি মুরগির খাদ্য তৈরি পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।

দেশি মুরগির খাবার তৈরি: দেশি মুরগির খাবার তৈরি করতে প্রয়োজন কাঁচা ঘাস, ফিসমিল, ধান, গম ও ভুট্টা ভাঙ্গা। আমরা আগেই জেনেছি দেশি মুরগিকে প্রথম ৩০ দিন বয়সে ব্রয়লার স্ট্রাটার ফিড খাওয়াতে হবে। আর এই সকল উপকরণ দিয়ে ১ মাস বয়সের দেশি মুরগির খাবার তৈর করার পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো-
  • প্রথমে আমরা ৬০ কেজি ভুট্টা ভাঙ্গা ফ্লোরে বিছায় দিবো।
  • এবার এর উপর ২০ কেজি ধান বিছায় দিবো।
  • এখন ২০ কেজি গম বিছায় দিবো।
  • এর উপর ২ কেজি লবন ছিটিয়ে দিবো।
  • এবার সকল উপকরণ গুলো ভালো করে মিশিয়ে নিবো।
  • দেশি মুরগিকে প্রতিদিন খাওয়ানোর সময় পরিমান মতো এই মিশানো খাবার সিদ্ধ করে নিবো।
  • এই সিদ্ধ করা প্রটি ১ কেজি খাবার এর সাথে ৯০ - ১০০ গ্রাম ফিসমিল মিশিয়ে দেশি মুরগিকে খেতে দিতে হবে।

দেশি মুরগির প্রতি দিনের খাবারের পরিমান: পর্যাপ্ত পরিমানের বেসি বা কম খাবার দিলে মুরগির ওজন ভালো হবে না, তই দেশি মুরগিকে পর্যাপ্ত পরিমানে খাবার দিতে হবে। নিম্নে আমাদের তৈরি খাবার এর পরিমান দেওয়া হলো-
  • ১ মাস বা ৩০ দিন বয়স থেকে দেশি মুরগিকে আমাদের তৈরি খাবার খেতে দিতে হবে।
  • এই খাবার ৩০ - ৩৭ দিন বয়সের প্রতিটি মুরগির জন্য ৩০ গ্রাম করে খেতে দিতে হবে। (১০০ টি দেশি মুরগির জন্য ১০০ * ৩০ = ৩০০০ গ্রাম বা ৩ কেজি প্রতি দিন খেতে দিতে হবে)
  • এবার ৩৮ - ৪৪ দিন বয়সের প্রতিটি দেশি মুরগিকে প্রতিদিন ৩৫ গ্রাম খাবার দিতে হবে। (১০০ টি দেশি মুরগির জন্য ১০০ * ৩৫ = ৩৫০০ গ্রাম বা ৩.৫ কেজি প্রতি দিন খেতে দিতে হবে)
  • একই ভাবে প্রতি ৭ দিন বা এক সপ্তাহ পর পর প্রতিটি দেশি মুরগির জন্য ৫ গ্রাম করে খাবার বৃদ্ধি করতে হবে।
  • আমাদের তৈরি খাবার এর পাশাপাশি দেশি মুরগিকে কাঁচা ঘাস খেতে দিতে হবে।
  • এই খাবার দেশি মুরগিকে ১ মাস বয়স থেকে বিক্রয় করা পর্যন্ত এই নিয়মে খাওয়ানো যাবে।
  • একটি দেশি মুরগি ৩০ থেকে ৬০ দিন বয়সে এই মিশানো খাবার ১ কেজি থেকে ১.২ কেজি খেয়ে থাকে।
  • আবার ৬০ থেকে ৯০ দিন বয়সে একটি দেশি মুরগি ১.৫ কেজি থেকে ১.৭ কেজি খাবার খায়।

এই নিয়মে খাবার খাওয়ালে দেশি মুরগির অধিক ওজন পাওয়া যাবে। দেশি মুরগির কৃমি প্রভাব অন্য মুরগির থেকে বেশি, তাই দেশি মুরগিকে ৪০ - ৪৫ দিন বয়সে কৃমি নাশক ঔষধ দিতে হবে।

দেশি মুরগি বিক্রয়ের সঠিক সময়: দেশি মুরগি সঠিক সময়ে বিক্রয় করতে না পারলে লাভবান হতে পারবেন না। কারণ ৩০ দিনে স্ট্রাটার ফিড খাওয়ে দেশি মুরগি ৩০০ - ৩৫০ গ্রাম ওজন আসে। আর আমাদের তৈরি খাবার ৩০ দিন খাওয়ালে মোর ৬০ দিনে দেশি মুরগির ওজন আসে ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম। এই ২ মাস বা ৬০ দিন বয়স হতে ৭০ দিন বয়সের মধ্যে দেশি মুরগি বিক্রয় করে দিতে হবে। কারণ ৬০ - ৭০ দিন পর দেশি মুরগি ওজন কম বৃদ্ধি পায়। এর পর যদি মুরগি রাখা হয় তাহলে খাবার খরচ হবে তবে ওজন বেশি বৃদ্ধি পাবে না, তাহলে লচ হবে। তাই ৬০ থেকে ৭০ দিন বয়সে দেশি মুরগি বিক্রয় করতে হবে।

প্রাকৃতিক উপায়ে দেশি মুরগির খাদ্য তৈরি পদ্ধতি


প্রাকৃতিক উপায়ে দেশি মুরগির খাদ্য তৈরি পদ্ধতি খুব সহজ ও খরচ কম। বাড়ির অবশিষ্ট খাবার দিয়ে অনেক গুলো দেশি মুরগি পালন করা সম্ভব। দেশি মুরগির খাবার অন্য মুরগির থেকে আলাদা হয়। দেশি মুরগি যে কোনো খাবার খায়, যমন - ভাত, চাল, গম, সাক-সবজি ইত্যাদি। বাসাই পালন করা দেশি মুরগি কে এই সলক খাবার ও সবুজ শাক-সবজি খেতে দিতে হবে।

দেশি মুরগির সবুজ শাক-সবজি গুলো হলো: যে কোনো সবজি কাটার পর অবশিষ্ট অংশ টুকরো টুকরো করে কেটে দিতে হবে। এই সকল সবজিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। এই সকল খাবারে দেশি মুরগি বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে মুক্ত থাকবে। ফার্মের মুরগি গুলো কেউ মাঝে মাঝে এই সবুজ শাক-সবজি খাওয়ানো উচিত।

আরো পড়ুনঃ 

অল্প খরচে ডিম পাড়া দেশি মুরগির খাবার তালিকা

FAQ

দেশি মুরগির খাবার তালিকা কি কি?

দেশি মুরগির খাবার তালিকা- ১. কাঁচা ঘাস ২. ফিসমিল ৩. ধান ৪. গম ৫. ভুট্টা ভাঙ্গা ৬. সাক-সবজি

অল্প খরচে দেশি মুরগির খাবার তৈরি পদ্ধতি কি?

অল্প খরচে দেশি মুরগির খাবার তৈরি করতে বাড়ির অবশিষ্ট খাবার ও শাক-সবজির অবশিষ্ট অংস ব্যাবহার করা হয়। অন্য মুরগির তুলনাই দেশি মুরগির খাবার অল্প খরচে তৈরি করা সম্ভব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url