গরুর পেট ফাঁপা রোগের ঔষধ ও সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি
গরুর খামারিদের পেট ফাঁপা রোগ সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। পেট ফাঁপা রোগটি অতি পরিচিত একটি রোগ। এই রোগটি সাধারণ মনে হলেও এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। পেট ফাঁপা রোগ গরুর ডাইজেস্টিভ সিস্টেমে সমস্যা সৃষ্টি করে। গরুর পেট ফোলা রোগে আক্রান্ত হলে কয়েকদিন খাওয়া দাওয়া ঠিক মোতো করে না।
গরুর পেট ফাঁপা বা পেট ফোলা রোগ প্রায় সময় মারাত্বক রুপ ধারণ করে। গরুর পেট ফাপা বা পেট ফোলা রোগ হলে সাথে সাথে চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এই রোগ টি গরুর খামারে খাবার পাত্র অপরিষ্কার থাকার কারণে বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত এই রোগের প্রধান লক্ষণ হলো পেট ফুলে যাওয়া, তবে অনেক সময় পেট ফোলে না, তখন খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেই। এই আর্টিকেলে আমরা গরুর পেট ফাঁপা বা পেট ফোলা রোগের ঔষধ ও সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
গরুর পেট ফাঁপা বা পেট ফোলা রোগ কী?
বিভিন্ন কারণে গরুর পেট ফাপা বা পেট ফোঁলা রোগ হয়। যেমন-
- গরুকে অধিক দানা খাবার খাওয়ালে।
- গরুর খাবার পাত্র অপরিষ্কার থাকলে।
- গরুকে পচা-বাশি খাবার খেতে দিলে।
- গরুর ঘাস বা খর অপরিষ্কার থাকলেও হতে পারে।
এই সব কারণ গুলোর মধ্যে কোনো একটি কারণে, গরুর রুমেনে অতিরিক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি হয়। ধীরে ধীরে এই গ্যাস বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই রোগকে গরুর পেট ফোলা বা পেট ফাঁপা রোগ বলে।
গরুর ব্লট ও টিমপ্যানি কি?
গরুর পেটে অতিরিক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস জমে পেট ফুলে যাওয়াকে টিমপ্যানি বলে। এর কারণে গরুর বদ হজম বা অজীর্ণতা তৈরি হয়। এই ফেনা যুক্ত গ্যাস বুদবুদ আকারে পেটে জমা হয়, একে ব্লট বলে। গরুর পেট ফোলা, পেট ফাঁপা, ব্লট ও টিমপ্যানি সব কিছু একই রোগ।
গরুর ব্লট বা টিম্পনি হওয়ার কারন কি?
গরুর ব্লট বা টিম্পনি হওয়ার মূল কারন হলো খাদ্য। খাদ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে হবে। খাবার ও পানির পাত্র পরিষ্কার রাখতে হবে। বেশি দানা খাবার, ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেশিয়াম খাওয়ানো যাবে না।
গরুর পেট ফাঁপা রোগের লক্ষণ গুলো কি কি?
গরুর পেট ফাঁপা রোগ খুব সহজে বোঝা যায়। নিম্নে গরুর পেট ফাঁপা রোগের লক্ষণ কি কি? তা দেওয়া হলো।
- গরুর জাবর কাটানো বন্ধ হয়ে যাবে।
- গরু খাবারে মুখ দিবে, তবে খেতে পারবে না।
- গরু বাবার উঠবে ও শুবে।
- গরুর জিহ্বা বার করে নিশ্বাস নিবে।
- পরুর পাইখানা প্রস্বাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
- গরুর পেট ফুলে যাবে।
গরুর পেট ফোলা রোগের প্রতিকার পদ্ধতি
যে কোনো রোগের প্রতিকার ব্যবস্থা জানা একজন খামারির প্রয়োজন। যে সকল কারনে গরুর পেট ফাঁপা রোগে আক্রান্ত হয়, এটি খামারির জানা থাকলে, সে সব কাজ গুলো করবে না। মাঝে মাঝে গরুকে খাবার সোডা খাওয়াতে হবে।
গরুর পেটে গ্যাস হলে করণীয়
গরুর পেটে গ্যাস হলে হলে প্রথম করণীয় হলো দূরত্ব ব্যাবস্থা গ্রহন করা। সাথে সাথে খাবার সোডা খাওয়াই দিতে হবে। এর পর প্রয়োজনীয় ঔষধ খাওয়াতে হবে।
গরুর পেট ফাঁপা রোগের চিকিৎসা
গরুর পেট ফাঁপা রোগের সঠিক চিকিৎসা প্রতিটি খামারির জানা প্রয়োজন। যে সমস্ত ঔষধ প্রয়োজন হয় তা খামারে রেখে দিতে হবে। নিম্নে গরুর পেট ফাঁপা রোগের ঔষধ গুলোর নাম দেওয়া হলো।
গরুর পেট ফাঁপা রোগের সাসপেনশন
- ব্লট ষ্টপ ভেট ওরাল সলুশন
- নো ব্লট ভেট ওরাল সলুশন
- জিরো ব্লট ভেট ওরাল সলুশন
- ম্যাগভেট প্লাস ওরাল সলুশন
গরুর পেট ফাঁপা রোগের পাউডার
- বভিকেয়ার
- রুমেনই প্লাস
- জাইমোভেট
- ডিজিম্যাক্স
- ডিজিটোন
গরুর পেট ফাঁপা রোগের ট্যাবলেট
- রুমেনটন
- বায়োকাড্ এক্সপি
- রুমকিওর
গরুর পেট ফাঁপা রোগের ঔষধের তালিকা
গরুর পেট ফাঁপা রোগের ঔষধ এর তালিকা ও খাওয়ানোর নিয়ম নিম্নের তালিকাতে দেওয়া হলো।
ঔষধের নাম |
খাওয়ানোর নিয়ম |
এপিটাইজার বা রুচির পাওডার |
একটি ১০০ কেজি ওজনের গরুকে সকালে ১০ গ্রামের একটি স্যাচেট ও বিকালে ১০ গ্রামের একটি স্যাচেট |
বভি কেয়ার বা বভি ভেট |
একটি ১০০ কেজি ওজনের গরুকে একটি স্যাচেট |
ব্লপ স্টপ/জিরো ব্লট |
গবাদিপশু খাদ্য বেশি খেলে তার পেট ফুলে যায় বা গরুর পেট ফাঁপা রোগ হয়। পশুটি প্রশ্রাব ও পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। এখন অবস্থায় দ্রুত সমাধান না করতে পারলে পশুটি মারা যায়। এসকল ক্ষেক্রে এই ছিরাপ ব্যবহার করা হয়। |
এন্টাসিড/এন্টাসিড প্লস |
মানুষের এন্টাসিড বা এন্টাসিড প্লাস খামরিরা অনেক সময় গবাদিপশুতে ব্যবহার করে। |
এই ওষধ গুলোর মধ্যে যে কোনো একটি ব্যবহার করে, ফলাফল না পেলে দূরত্ব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে।