ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি - বীজের দাম, চারা তৈরী, গাছের যত্ন, রোগ ও ফলন

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি - বাংলাদেশের অন্য সবজি চাষ থেকে একটু ভিন্ন। ক্যাপসিকাম মূলত মিষ্টি মরিচ। মাত্র একটি ক্যাপসিকাম বীজের দাম প্রায় ৫-৭ টাকা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ক্যাপসিকাম চাষের সময় হলো অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে ক্যাপসিকাম বীজ বোপণ করতে হবে। ক্যাপসিকাম বীজ আপনার একালায় বীজের দোকানে পাওয়া যায়। একজন সফল ক্যাপসিকাম চাষীর সাথে পরামর্শ করে বীজ ক্রয় করবেন।

ক্যাপসিকাম চাষের প্রথম কাজ হলো ক্যাপসিকাম বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা। ভালো ফলনের জন্য প্রয়োজন একটি সুস্থ সবল চারা। ক্যাপসিকাম চারা তৈরী করার জন্য প্রতি শতক জমির জন্য ১ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। চারা তৈরি করার পরের কাজ হলো ক্যাপসিকাম গাছের যত্ন। ক্যাপসিকাম গাছের যত্ন সঠিক ভাবে না নিতে পারলে ভালো ফলন আসা করা যাবে না। ক্যাপসিকাম গাছের রোগ সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। কোনো রোগে ক্যাপসিকাম গাছ আক্রান্ত হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

এই আর্টিকেলে আমরা যে সকল বিষয় গুলো আলোচনা করবো সেগুলো হলো- ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি, ক্যাপসিকাম বীজের দাম, ক্যাপসিকাম গাছের যত্ন, ক্যাপসিকাম গাছের রোগ, ক্যাপসিকাম ফলন, ক্যাপসিকাম চাষের সময়, ক্যাপসিকাম চারা তৈরী, ক্যাপসিকাম বীজ কোথায় পাওয়া যায়, ক্যাপসিকাম বীজ থেকে চারা উৎপাদন পদ্ধতি ইত্যাদি।

ক্যাপসিকাম চাষের সময়


বাংলাদেশে ক্যাপসিকাম চাষের সঠিক সময় হলো অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস। অক্টবর থেকে নভেম্বর মাসে জমিতে ক্যাপসিকাম বীজ বোপণ করতে হয়। তবে বাংলাদেশে এখন ক্যাপসিকাম চাষ যে কোনো সময়ে চাষীদের চাষ করতে দেখা যাচ্ছে। তবে শীত কালে ক্যাপসিকাম এর ফলন ভালো হয়। তাপমাত্রা বেশি হলে ক্যাপসিকাম গাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয়, ফুল নষ্ট হয় ও ফল ঝরে যায়।

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি


ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি খুবই সহজ। ক্যাপসিকাম চাষ করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন হলো ক্যাপসিকাম বীজ। ভালো জাতের ক্যাপসিকাম চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যাবে। নিম্নে ক্যাপসিকাম জাত গুলো দেওয়া হলো

ক্যাপসিকাম এর জাত


বাংলাদেশে ক্যাপসিকাম এর যে সকল জাত গুলো চাষ করা হয় সেগুলো হলো-
  • California Wonder
  • Tender Bell (F1)
  • Yolow Wonder
এই সকল জাত গুলো ছাড়া আরো কিছু জাতের ক্যাপসিকাম বীজ পাওয়া যায়। ক্যাপসিকাম জাতের বীজের দাম সম্পর্কে নিম্নে দেওয়া হলো।

ক্যাপসিকাম বীজের দাম


ক্যাপসিকাম বীজের দাম পার পিস ৫ থেকে ৭ টাকা। প্রতি শতক জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করার জন্য ১ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। আপনাকে ভালো জাতের ক্যাপসিকাম বীজ সংগ্রহ করতে হবে। ভালো জাতের ক্যাপসিকাম বীজ কোথায় পাওয়া যায় তা নিম্নে দেওয়া হলো।

ক্যাপসিকাম বীজ কোথায় পাওয়া যায়


আপনার এলাকায় যে দোকানে বীজ বিক্রয় করে, তাদের সাথে যোগাযোগ করলে ক্যাপসিকাম বীজ পাওয়া যাবে। তবে আপনি আপনার পরিচিত কেউ ক্যাপসিকাম চাষ করলে তার সাথে ক্যাপসিকাম বীজ নিয়ে একটু আলোচনা করবেন। এবার সঠিক ভাবে ক্যাপসিকাম এর চারা তৈরি করতে হবে। ক্যাপসিকাম চারা তৈরী পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো।

ক্যাপসিকাম চারা তৈরী


ক্যাপসিকাম চারা তৈরী করার আগে সঠিক বীজ নির্বাচন করবেন। বীজের গুণগত মান ভালো না হলে ভালো চারা পাওয়া যাবে না।

ক্যাপসিকাম বীজ থেকে চারা উৎপাদন


ক্যাপসিকাম বীজ থেকে চারা উৎপাদন পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো-
  • প্রতি ১ শতক জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করার জন্য ১ গ্রাম হারে বীজ ওজন করে নিতে হবে।
  • এখন বীজতলা তৈরি করে নিতে হবে।
  • বীজ গুলে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
  • বীজতলাতে লাইন করে বীজ বোপন করতে হবে।
  • এখন ঝরনা দিয়ে হাকলা সেচ দিতে হবে।
  • ক্যাপসিকাম বীজ গজাতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ দিন।
  • ক্যাপসিকাম বীজ বোপণের ৮ থেকে ১০ দিন পর যখন ৩ থেকে ৪ পাতা চারা হবে, তখন চারা গুলো পলি ব্যাগে স্থান্তর করতে হবে।
  • পলিব্যাগ গুলো ছায়া স্থানে স্থান্তর করতে হবে।

ক্যাপসিকাম চারা রোপণ পদ্ধতি


জমিতে ক্যাপসিকাম চারা রোপণ করার জন্য বেড তৈরি করতে হবে। মালচিং পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষ করতে পারলে ভালো হয়। মনে রাখতে হবে, ক্যাপসিকাম এর জমিতে বৃষ্টির পানি জমতে দেওয়া যাবে না।

ক্যাপসিকাম গাছের যত্ন


ক্যাপসিকাম এর ভালো ফলনের জন্য প্রয়োজন ক্যাপসিকাম গাছের অধিক যত্ন। সঠিক ভাবে সেচ ও সার প্রয়োগ করতে হবে। কোনো রোগে আক্রান্ত হয়েছে মনে হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। পোকা মাকড় এর আক্রমন এর জন্য কিটনাশক স্প্রে করতে হবে।

উপসংহারঃ

ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি - বীজের দাম, চারা তৈরী, গাছের যত্ন, রোগ ও ফলন সম্পর্কে যদি কোনো ভুল তথ্য দিয়ে থাকি তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আসা করি, ক্যাপসিকাম চাষ পদ্ধতি - বীজের দাম, চারা তৈরী, গাছের যত্ন, রোগ ও ফলন সম্পর্কে কোনো ভুল তথ্য আপনাদের দিতেছি না। এই পোস্টে বানান বা বাক্যে কোনো ভুল থাকলে আমাকে মাফ করবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url